যে বিষয়গুলোতে আপনি ভালো রেজাল্ট করলে ওয়েবসাইট গুগলের Rank হবেই। এসইও টিউটোরিয়াল পর্ব-১
আসসালামু আলাইকুম
পোষ্টের মূল টপিক টাইটেল দেখেই বুঝে গিয়েছেন। আমরা চাই যে আমাদের ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলো গুগলে rank করুক। কারণ এতে আমাদের ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়বে। আর ট্রাফিক যত বেশি হবে ইনকাম ততই বেশি হবে। তাই প্রত্যেকের ইচ্ছা তাদের পোস্টগুলো সার্চ করলে যেন গুগলের প্রথম পেজে পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটের কনটেন্ট গুগলের রেংক করানো সহজ কাজ নয়। একটি পোস্টকে google এর রেংক করানোর জন্য একজন এসইও এক্সপার্ট এর ৫-৬ মাস ও সময় লেগে যায়। যে সকল কি ওয়ার্ডগুলোর সার্চ ভলিউম ভালো সেগুলোর রেংক করাতে হলে এক মাস তো লাগেই। আমাদের সাধারণ লেখকদের দ্বারা একটি নতুন ওয়েবসাইট এর কনটেন্ট গুগলের রেংক করানো অনেক কঠিন। বড় বড় ওয়েবসাইট গুলো জনপ্রিয় কিওয়ার্ড নিয়ে সব সময় প্রতিযোগিতা করে। কিন্তু একটি নতুন ওয়েবসাইটে সাধারণ কিওয়ার্ডই google এ রেংক করানো কঠিন। অবশ্য একটি নতুন ওয়েবসাইট এর লেখক এর করণীয় হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বীমূলক পোস্ট না করা। এবং সব সময়ই কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট করা। আপনি একটি নতুন ওয়েবসাইট নিয়ে একটি পুরনো ওয়েবসাইটের সাথে কখনোই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পেরে উঠবেন না। তাই আমাদের উচিত গুগলে জোরদার কিওয়ার্ড রিসার্চ করা। যে সকল কিওয়ার্ডের ভলিউম মোটামুটি আছে আর প্রতিদ্বন্দ্বী ১০ জনের কম সে সকল কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে হবে। অন্যথায় পুরনো ওয়েবসাইটের সাথে কখনো পেরে উঠবেন না। এই বিষয়গুলো নিয়ে পরের টিউটোরিয়াল গুলোতে আলোচনা করব। এখন এই পোস্টে শর্টকাট ওয়েবসাইট গুগলের রেংক করানোর সবচেয়ে ভালো মাধ্যম গুলো বলবো।
ওয়েবসাইট google এর রেংক করানোর পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ
একটি ওয়েবসাইট কখনোই গুগলের র্যাংক হয় না। র্যাঙ্ক হয় তার কনটেন্ট গুলো। আর এই কনটেন্ট গুলা র্যাঙ্ক করলেই আমরা বলি ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক করেছে। একটা ওয়েবসাইট কে গুগলের রেংক করানোর জন্য প্রতিটি কাজই গুরুত্বপূর্ণভাবে করতে হবে। কারণ এখন google এ কোটি-কোটি ওয়েবসাইট। যার অধিকাংশই র্যাংকিংয়ে আগে যাওয়ার জন্য খুবই যত্ন সহকারে কাজ করে। সবাই রেঙ্ক পাওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দই করে। তাই এখন আর ওয়েবসাইটে কনটেন্ট পাবলিস্ট করলেই হয় না তার সকল কিছু ঠিকঠাক মতো করতে হয়। এগুলোর মধ্যে আমি প্রধান পাঁচটি টপিক সংগ্রহ করেছি। যার একটা বিষয়ে আপনার ফলাফল খারাপ হলেই আপনি রেঙ্ক করতে পারবেন না।
টেকনিক্যাল এসইও এবং এসইও
একটি ওয়েবসাইট এর এসইও করার জন্য যে সকল টেকনিক্যাল কাজ করা হয় তাকেই টেকনিকাল এসইও বলে। একটি ওয়েবসাইট তৈরি থেকে শুরু করে কনটেন্ট আপলোড পর্যন্ত যে সকল কাজ করা হয় সেগুলো সবাই টেকনিক্যাল এসইও। যেমন, responsive ওয়েবসাইটের ডিজাইন, সঠিক নিয়মে ওয়েবসাইটের সাইট ম্যাপ সাবমিট ইত্যাদি। টেকনিক্যাল এসইও মূলত ওয়েব ডিজাইনারদের উপর নির্ভরশীল। একটি ওয়েবসাইট এমনভাবে তৈরি করতে হবে জেনো ওয়েবসাইটটি ইউজারের কাছে ভালো লাগে। শুধুই ইউজার নয় সব ক্ষেত্রেই পারফেক্ট হতে হবে। আর এসইও হচ্ছে রানিং ওয়েবসাইটের কাজ করার সময় যে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করি। যেমন কনটেন্ট লেখার জন্য কিওয়ার্ড রিসার্চ করা। আপনাকে এমন একটি কিওয়ার্ড নিয়ে লিখতে হবে যেটা খুব সহজেই গুগলের রেংক করাতে পারবেন। অর্থাৎ কিওয়ার্ড ডিফিকল্টি ৫০% এর নিচে। আর একটি নতুন ওয়েবসাইট হলে কিওয়ার্ড ডিফিকল্টি ৩০% হবে। হতেই হবে যে এইরকম না, জাস্ট হলে ভালো হয় আরকি। তো আমরা এমন একটি কিওয়ার্ড নিবো যে কিওয়ার্ড টি আমাদের সাধ্যমত গুগলের রেংক করাতে পারবো।
কোয়ালিটির সম্পূর্ণ পোস্ট লেখা
একটি পোস্ট এর কোয়ালিটি তখনই সুন্দর হয় যখন পোস্টটি পড়ে ভিজিটর খুশি হবে (সাধারণত)। গুগল সব সময় আপনাকে বলবে যে কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট করুন। কিন্তু কিভাবে কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট করব সেটা বলে না। গুগল আরেকটি কথা বলে, প্রয়োজনের বাহিরের কিছু যেন না লিখি। এটা খুবই ভালো উপদেশ। কিন্তু বাস্তবতা হলো google সব সময়ই বড় বড় পোস্ট গুলোকে Rank করাতে চায়। তবে কোয়ালিটি এর উপর নজর রেখে। আসলে google এর রোবটগুলো আমাদের কনটেন্ট এর টেক্সট পরেই বুঝতে পারে যে এই পোস্ট র্যাঙ্ক করানো উচিত কিনা। তাই আমাদের টার্গেট থাকতে হবে কম করে হলেও ১০০০ ওয়ার্ডের কনটেন্ট (১৮০০ হলে ভালো হয়) লিখতে হবে। তবে এক্ষেত্রে আজেবাজে কথা দিয়ে ওয়ার্ড কাউন্ট করলে তো হবে না।
আর উপরোক্ত দুইটি কাজ হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আসলে আমরা এগুলা করেও থাকি। তারপরও দেখা যায় যে ওয়েবসাইট র্যাংক হয় না। আর একটি ওয়েবসাইট ব্যাংক হওয়ার পেছনে আরও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে।
ডোমেন অথরিটি বৃদ্ধি
অনেকেই হয়তো প্রথম এই শব্দের সাথে পরিচিত হয়েছেন। কিন্তু এটা আপনার ওয়েবসাইটের রেংক করানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে ভূমিকা পালন করে। ডোমেইন অথরিটি হল গুগলের কাছে আপনার ওয়েবসাইটের বিশ্বস্ততা। আপনি যখন কাউকে বিশ্বাস করবেন তাহলে তার কাজগুলো করতে আগ্রহী হবেন। তাই আমাদের গুগল এর কাছে বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। তাহলে সে আমাদের র্যাঙ্ক দিবে। এই বিশ্বাস অর্জন করতে হলে আপনাকে ভালো ভালো আর্টিকেল লিখতে হবে। অবশ্য ওয়েবসাইট এর বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ধীরে ধীরে তার অথরিটি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু আপনি যদি তার রুল গুলো ফলো করে কাজ করেন তাহলে সে খুব তাড়াতাড়ি আপনাকে বিশ্বাস করবে। অথরিটি বৃদ্ধির জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ব্যাকলিংক তৈরি করা। এখন, বুঝবেন কিভাবে যে আপনার website google এর কাছে কতটা বিশ্বস্ত? এইজন্য আপনার ওয়েবসাইটে ডোমেইন অথরিটি চেক করতে হবে। গুগলে গিয়ে সার্চ করুন domain authority checker । এরপর অনেক টুলস পাবেন যেখানে আপনার ওয়েবসাইটের অথরিটি দেখতে পারেন।
ব্যাকলিংক তৈরি করা
একটি ওয়েবসাইট এর সাথে অন্য একটি ওয়েবসাইট এর লিংক করানো হচ্ছে ব্যাকলিংক করা। মনে করুন, আমার ওয়েবসাইটে আপনার সাইটের লিংক রেখেছেন। এখানে আপনি একটি ব্যাকলিংক পেয়েছেন। যখন আপনার ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক বাড়বে। তখন গুগল ভাববে যে আপনার ওয়েবসাইটটি খুবই প্রয়োজনীয়। তাই সবাই লিংক শেয়ার করতেছে। আসলে এটার আরও একটি উপকারীতা রয়েছে। গুগল এর বট হল একটি মাকড়সা যে সারাদিন জালে জালে ঘুরে বেড়ায়। আপনি যদি একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এর সাথে লিঙ্ক করতে পারেন। জনপ্রিয় ওয়েব সাইটে তো এমনিতেই বট বারবার আসবে। তখন ওই লিংকটিতে ক্লিক করে আপনার ওয়েবসাইটে আসবে। আর বট যত আপনার ওয়েবসাইটে বেশি আসবে। আপনার ওয়েবসাইট ততই র্যাঙ্ক হবে। তাই আমরা চেষ্টা করব একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এ ব্যাকলিংক তৈরি করতে। তাহলে আমাদের লাভ হলো- ভিজিটর আসবে, ব্যাক লিঙ্ক বৃদ্ধি পাবে, গুগল বট ওয়েব সাইট চিনবো। আর এই কাজগুলোর মাধ্যমে আপনার ডোমেইন অথরিটি বৃদ্ধি পাবে। আসলে একটি ওয়েবসাইট র্যাংক হওয়ার জন্য ডোমেইন অথরিটি এর তুলনা নেই।
ওয়েবসাইটের স্পিড ঠিক রাখা
আমরা যখন একটু ওয়েবসাইট এ ভিজিট করার জন্য ক্লিক করি। তখন সাধারণত তিন সেকেন্ড এর বেশি সময় ধরে লোড হলে আমরা বিরক্ত হয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসি। কারণ তার বিকল্প তো আমাদের কাছে অভাব নেই। আর যদি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয় তাহলে হয়তো বেরোই না। আর এই বিষয়টা গুগল পছন্দ করে না। কারন আমরা বিরক্ত হয়ে বের হয়ে আসলে শুধু ওয়েবসাইট কে গালি দেই না। সাথে গুগলকেও গালি দেই যে এটা কি ধরনের সাইট গুগল আমাকে দেখালো। তাই গুগল সব সময় স্লো ওয়েবসাইটকে পেছনে রাখে। গুগল বলছে একটি ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড দুই সেকেন্ড থাকলে ভালো হয়। সাধারণত একটি নতুন ওয়েবসাইটে লোডিং স্পিড ২ সেকেন্ডের কম ও রাখা সম্ভব। আর এই বিষয়টা নতুন ওয়েবসাইটের জন্য অনেক বড় ফ্যাক্টর। যখন একটি ওয়েবসাইট পুরনো হয়ে যায়। তখন সেটা অনেক কন্টেন্ট থাকে যার কারণে সেটা স্লো হয়ে যায়। তখন সেই সকল ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে এই ফ্যাক্টর টি কাজ করে না। কারণ এটায় অনেক কনটেন্ট আছে স্লো হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু একটি নতুন ওয়েবসাইট তো কনটেন্ট কম থাকে। তাহলে সেটা স্লো হবে কেন? আর এখনই যদি স্লো হয় তাহলে তো ভবিষ্যতে আরো অনেক স্লো হয়ে যাবে। তাই গুগল নতুন ওয়েবসাইট স্লো হওয়া পছন্দ করেনা। মূলত নতুন ওয়েবসাইট স্লো হওয়ার কারণ হয় ওয়েবসাইটের থিম। আমাদের অবশ্যই ওয়েবসাইটের থিম ক্রয় করার আগে চেক করে নিতে হবে এটার লোডিং স্পিড কেমন। লোডিং স্পিড চেক করার জন্য web speed check লিখে গুগলে সার্চ দিলেই অনেক রকমের টুল পেয়ে যাবেন। এরপর ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড চেক করে নিবেন। ওয়েবসাইটের স্পিড ঠিক রাখার জন্য ইমেজ অপটিমাইজেশন এর গুরুত্ব অনেক। তাই আমরা চেষ্টা করব আর্টিকেলে যত কম ইমেজ ব্যবহার করা যায়। এবং যেগুলা ব্যবহার করব তার সাইজ reduce করে ২০ কেবি এর মধ্যে রাখবো।
বর্তমানে ওয়েবসাইট ব্যাংক করানোর জন্য ২০০-৩০০ ফ্যাক্টর নিয়ে কাজ করতে হয়। উপরোক্ত পাঁচটি হলো এগুলোর মূল। উপরোক্ত পাঁচটি বিষয়ে যদি আপনি A+ পান। তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট গুগলে রেংক করানোর সম্ভাবনা ৮০%। এসইও টিউটোরিয়াল পর্ব-১ এ মূল ফ্যাক্টরগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। পরের পর্ব থেকে Rank নিয়ে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পর্কে বলবো।